মহাকাশে পাড়ি বান্দলার

মহাকাশে পাড়ি বান্দলার

অন্ধ্রপ্রদেশের গুন্টুরে দাদুর বাড়িতে যখন বিদ্যুৎ পরিষেবা চলে যেত, তখন অন্ধকারে ছাদে শুয়ে রাতের আকাশের তারা দেখত একটা ছোট্ট মেয়ে। সে দিনের সেই একরত্তিই বড় হয়ে নিজেই মহাকাশে পাড়ি দিলেন। তিনি শিরিষা বান্দলা। কল্পনা চাওলা, সুনীতা উইলিয়ামসের পর শিরিষাই তৃতীয় ভারতীয় বংশোদ্ভূত মহিলা, যিনি মহাকাশে পাড়ি দিয়েছেন।
এক সাক্ষাৎকারে শিরিষা বলেছেন, ‘‘ছোট থেকেই মহাকাশচারী হতে চেয়েছিলাম…মহাকাশচারী হওয়া আমার শুধু স্বপ্নই ছিল না। তা একটি লক্ষ্য ছিল, যা পূরণ হয়েছে।’’
দৃষ্টিশক্তি দুর্বল হওয়ায় নাসা-র মহাকাশচারী হতে পারেননি তিনি। তাই ইঞ্জিনিয়ারিংকে পেশা হিসেবে বেছে নেন।
কিন্তু তার পরও তাঁর মহাকাশ পাড়ির স্বপ্ন অধরা থেকে যায়নি। ব্রিটিশ ধনকুবের রিচার্ড ব্র্যানসনের সংস্থায় এরোনটিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার ও গবেষেক হিসেবে কাজ শুরু করেন।
গত বছর জুলাই মাসে ভার্জিন গ্যালাক্টিকের প্রথম মহাকাশ বিমানে জায়গা করে নিয়েছিলেন এই এরোস্পেস ইঞ্জিনিয়ার।
মহাকাশে পাড়ি দেওয়া সভ্যতায় এক বিরলতম অভিজ্ঞতা। তাই নিজেকে ভাগ্যবান মনে করেন বলে জানিয়েছেন শিরিষা।
সম্প্রতি এক সম্মেলনে যোগ দিতে ভারতে আসেন শিরিষা। সেখানেই তাঁর মহাকাশচারী হয়ে ওঠার গল্প শোনান তিনি।
তিনি বলেছেন, ‘‘যখনই আকাশের তারাদের দিকে তাকাতাম, মনের মধ্যে অনেক কৌতূহলের উদ্রেক হত।”
মহাকাশ থেকে পৃথিবীর দিকে তাকানোর পর যে অপরূপ সৌন্দর্য তাঁর চোখে ধরা পড়েছে, সেই অভিজ্ঞতার কথাও ভাগ করে নিয়েছেন শিরিষা।
কল্পনা চাওলার ভূমিকা তাঁর জীবনে যে কতখানি, সে কথাও তিনি উল্লেখ করেছেন। তাঁর কথায়, ‘‘কল্পনা চাওলার সঙ্গে কখনও দেখা হয়নি। কিন্তু আমার জীবনে ওঁর গভীর প্রভাব রয়েছে।’’
বর্তমানে ভার্জিন গ্যালাক্টিকে গভর্নমেন্ট অ্যাফেয়ার্স অ্যান্ড রিসার্চ অপারেশনস-এর ভাইস প্রেসিডেন্ট পদে রয়েছেন শিরিষা।
গুন্টুরের মেয়ে হলেও শিরিষার বেড়ে ওঠা টেক্সাসের হিউস্টনে। মহাকাশচারী হবেন, ছোট থেকেই মনস্থির করে নিয়েছিলেন। তাই অ্যাপোলো অ্যাস্ট্রোনটস থেকে মহাকাশচারী হয়ে ওঠার উপযোগী পড়াশোনা করেন। মহাকাশে পাড়ি দেওয়ার পর আবারও সেখানে যাওয়ার ব্যাপারে তাঁর ষোল আনা ইচ্ছে। সে কথা খোলাখুলি জানিয়েছেন শিরিষা।