লুপ্তপ্রায় প্রাণীদের বাঁচানোর যুগান্তকারী আবিষ্কার

লুপ্তপ্রায় প্রাণীদের বাঁচানোর যুগান্তকারী আবিষ্কার

হিমায়িত শুষ্ক ত্বকের কোষ থেকে ইদুঁরের ক্লোন তৈরি হল! জাপানের ইয়ামানশি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানীরা এই যুগান্তকারী আবিষ্কারটি করলেন। বিশ্বের বিপন্ন প্রজাতির বিপুল সংখ্যক প্রাণীদের বাঁচানোর জন্য এই আবিষ্কার। আবিষ্কারের কথা প্রকাশ করেছে ইংল্যান্ডের জনপ্রিয় সংবাদপত্র দ্য গার্ডিয়ান। বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা ফ্রিজ-ডায়িং প্রযুক্তি ব্যবহার করে তরল নাইট্রোজেন ছাড়া কোষ সংরক্ষণের উপায় খুঁজছিলেন। অবশেষে নিরাপদে এবং কম খরচে কোষ সংরক্ষণ হয়েছে। এই প্রক্রিয়ায় ইদুঁরের ল্যাজের দিকের ত্বকের কোষগুলিকে ফ্রিজ-ডায়িং পদ্ধতিতে ৯ মাসের জন্য সংরক্ষণ করে রাখা হয়েছিল। সেখান থেকে গবেষকরা ইদুঁরের ক্লোন তৈরি করার চেষ্টা করেছিলেন। ফ্রিজ-ডায়িং পদ্ধতিতে কোষগুলিকে মেরে ফেলার একটা প্রবণতা তৈরি হয়। কিন্তু গবেষকরা বুঝেছিলেন তারা প্রাথমিক পর্যায়ের ক্লোন করা ভ্রূণ তৈরি করতে পেরেছিলেন। আর সেটা সম্ভব হয়েছিল মৃত কোষগুলিকে ইদুঁরের ডিমে প্রবেশ করিয়ে এবং তাদের নিউক্লিয়াস নিষ্কাশন করিয়ে।
ক্লোন করা প্রথম ইদুঁরের নাম ছিল ডোরামি। কার্টুন-শো ডোরেমনের নামানুসারে এই নামকরণ করা হয়েছিল। পরবর্তীকালে একই নাম আরও ৭৪টি ক্লোন করা ইদুঁরেরও রাখা হয়েছিল। ক্লোনগুলি স্বাভাবিক অবস্থায় আছে কি না এবং তাদের স্বাস্থ্যকর বৃদ্ধি হয়েছে কি না সেটা নিশ্চিত করার জন্য ৯টি মহিলা আর ৩টি পুরুষের সঙ্গে স্বাভাবিক ইদুঁরের প্রজননও করানো হয়েছিল। কিন্তু প্রক্রিয়াটি সফল হওয়া সত্বেও ত্বকের কোষে ক্ষতিগ্রস্ত ডিএনএ ফ্রিজ-ডায়িংয়ের কারণে অকার্যকর থেকে যায়। দেখা গিয়েছে একটি সুস্থ মহিলা ও পুরুষ ইদুঁরের বাচ্চা তৈরির সাফল্যের হার ছিল প্রায় ০.২ থেকে ৫.৪ শতাংশ। গবেষকদের পর্যবেক্ষণ, কিছু কোষে ওয়াই ক্রোমজোম হারিয়ে গিয়েছে। এর ফলে পুরুষ ইদুঁরের প্রাপ্ত কোষ থেকে মহিলা ইদুঁরের জন্ম হয়েছে। গবেষকদের দাবি, অন্যান্য লুপ্তপ্রায় প্রাণীর ক্ষেত্রে একই চিকিৎসার প্রয়োগ হতে পারে। সেখানে যদি শুধু পুরুষ প্রাণী বেঁচে থাকে তাহলে তার থেকে নারী উৎপাদন করা যাবে এবং শেষপর্যন্ত প্রাকৃতিক উপায়ে প্রজাতিরও সংরক্ষণ করা সম্ভব।