শরীরে মাইক্রোচিপ, তাতেই হচ্ছে লেনদেন

শরীরে মাইক্রোচিপ, তাতেই হচ্ছে লেনদেন

শপিং মলের কাউন্টারে দাঁড়িয়ে রয়েছেন এক ব্যক্তি। তাঁর দিকে ডিজিটাল কার্ড রিডার এগিয়ে দিলেন ক্যাশিয়ার। তবে আশ্চর্যের বিষয়, ডেবিট বা ক্রেডিট কার্ড বার করলেন না তিনি। ব্যবহার করলেন না কোনো মোবাইল ব্যাঙ্কিং অ্যাপও। কেবলমাত্র কনট্যাক্টলেস কার্ড রিডারের মাধ্যমে স্ক্যান করলেন তাঁর বাঁহাতের একটি আঙুল। প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই ডিজিটাল স্ক্রিনে ভেসে উঠল ‘ট্রান্সাকশন কমপ্লিট’। মনে হতে পারে ম্যাজিক। কিন্তু তা নয়।

প্রযুক্তির উন্নতিই এই নতুন দুনিয়ায় এনে হাজির করেছে আমাদের। সম্প্রতি এমনই অভিনব প্রযুক্তি বাজারে আনল ব্রিটিশ-পোলিশ ফার্ম ওয়ালেটমোর। কিন্তু কোনোরকম বৈদ্যুতিন কার্ড কিংবা যন্ত্র ছাড়াই কীভাবে হচ্ছে এই ভার্চুয়াল অর্থ বিনিময়? আদতে বৈদ্যুতিন কার্ডের বদলে মাইক্রোচিপই এই প্রযুক্তির কেন্দ্রবিন্দু। যা প্রতিস্থাপিত করা হয় মানুষের আঙুলের মধ্যে। ফলে, ডিজিটাল কার্ডের বদলে অনেকটা কিউআর কোড স্ক্যানের মতোই আঙুল স্ক্যান করলেই সম্ভব হয় অর্থ বিনিময়।
১৯৯৮ সালে প্রথম মানুষের দেহে স্থাপন করা হয়েছিল মাইক্রোচিপ। অবস্থান নির্ণয়ের জন্যই সেসময় ব্যবহৃত হত এই প্রযুক্তি। তবে সময়ের সঙ্গে সঙ্গেই এসেছে বদল। বিশেষত বিগত পাঁচ বছরে ব্যাপক মাত্রায় মাইক্রোচিপ ব্যবহৃত হচ্ছে বাণিজ্যিক ক্ষেত্রে। প্রায় এক দশক আগেই মাইক্রোচিপ প্রতিস্থাপনের মাধ্যমে অর্থ আদান-প্রদান বিষয়ে গবেষণা শুরু করেছিল ব্রিটিশ-পোলিশ সংস্থাটি। বছর তিনেক আগে শেষ পর্যন্ত সাফল্য পায় তারা। ২০১৯ সালে প্রথম পরীক্ষামূলকভাবে এই চিপ প্রতিস্থাপন করা হয় বেশ কিছু মানুষের আঙুলে। তা সফল হওয়ার পর, ২০২১ সাল থেকে বাণিজ্যিকভাবে বাজারে উপলব্ধ করে দেওয়া হয় এই বিশেষ মাইক্রোচিপ প্রযুক্তি। শুধু ব্রিটেন কিংবা পোল্যান্ডই নয়, বিশ্বের সর্বত্রই ব্যবহার করা যাবে এই মাইক্রোচিপ। এমনটাই জানাচ্ছেন ওয়ালেটমোর সংস্থার কর্তৃপক্ষ। পাশাপাশি এই মাইক্রোচিপের আয়তন একটি চালের দানার মতো হওয়ায়, আঙুলের চামড়ার নিচে রক্তপ্রবাহেও তা কোনো প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে না। বায়োপলিমার দিয়ে গঠিত হওয়ায়, এই চিপ থেকে সংক্রমণেরও ভয় নেই কোনো। ফলে সবদিক থেকেই নিরাপদ এই মাইক্রোচিপ।