সামান্য অসাবধানে হারায় প্রাণও! কোথায় অবস্থিত ‘বিষ-বাগান’?

সামান্য অসাবধানে হারায় প্রাণও! কোথায় অবস্থিত ‘বিষ-বাগান’?

লোহার গেটের ওপর ঝুলছে কালো সাইনবোর্ড। তাতে কালো হরফে বড়ো বড়ো করে লেখা, ‘এই বাগানের গাছপালা আপনার প্রাণ কেড়ে নিতে পারে’। লেখায় তলায় আঁকা একটি কঙ্কালের ছবি।
না, নেহাত হেঁয়ালি বা রসিকতা নয়। পাড়া-প্রতিবেশীদের প্রবেশ আটকানোর জন্যও লাগানো হয়নি এই সাইনবোর্ড। বরং, এই সতর্কবার্তা পর্যটকদের জন্য। হ্যাঁ, আক্ষরিক অর্থেই কয়েক মুহূর্তের মধ্যে কোনও ব্যক্তির প্রাণ কেড়ে নিতে পারে এই বাগান। ইংল্যান্ডের নর্থাম্বারল্যান্ডের অ্যালানউইক গার্ডেনের মধ্যেই রয়েছে এই বিশেষ বাগানটি। যা পরিচিত ‘পয়জন গার্ডেন’ বা ‘বিষের বাগান’ নামে।
২০০৫ সালে বেশ মোটা অঙ্কের টাকা খরচ করেই এই বিষাক্ত বাগান তৈরি করেছিলেন ব্রিটিশ উদ্ভিদবিদরা। শুধু বৈজ্ঞানিক কর্মকাণ্ডের জন্যই নয়, সাধারণ দর্শকদের প্রবেশেরও অনুমতি দেওয়া হয় এই বাগানে। অবশ্য প্রবেশের আগে লিখিত হলফনামা জমা দিতে হয় দর্শকদের। এই বাগানে সম্পূর্ণভাবে নিষেধ গন্ধ নেওয়া, কোনও গাছের পাতায় স্পর্শ করা। সামান্য ভুলই প্রাণ কেড়ে নিতে পারে। তা সত্ত্বেও প্রতি বছর কয়েকশো পর্যটক অজ্ঞান হয়ে যান এই বাগানে। ‘পয়জন গার্ডেন’-এর সরকারি ওয়েবসাইটের তথ্য বলছে তেমনটাই। ব্রিটিশ গবেষকদের অভিমত, সাধারণের মধ্যে সচেতনতা তৈরি করতেই এই উদ্যোগ। আসলে আমাদের পরিপার্শ্বেই এমন বহু উদ্ভিদ ছড়িয়ে রয়েছে যা আদতে বিষাক্ত। অথচ, আমরা তাদের ঘাতক সত্ত্বা সম্পর্কে বিন্দুমাত্র জানি না। উদাহরণস্বরূপ ধরে নেওয়া যায় রডোডেনড্রনের কথা। রডোডেনড্রন চেনে না, এমন মানুষ বিরল। কিন্তু এই গাছটিও যে বিষাক্ত, তা অনেকেই জানেন না। রডোডেনড্রনের পাতায় গ্রানোটক্সিন নামের একটি বিশেষ পদার্থ থাকে, যা ভুলবশত পাকস্থলীতে চলে গেলে তৎক্ষণাৎ স্নায়ুতন্ত্রের সমস্যা শুরু হয় মানবদেহে। তাছাড়া কোনও একটি অঞ্চলে রডোডেনড্রনের আধিক্য দেখা দিলে, সেখানে মারা যায় অন্য সমস্ত প্রজাতির গাছ। এইসব খুঁটিনাটি তথ্যের ব্যাপারে মানুষের মধ্যে সতর্কতা ও সচেতনতা গড়ে তুলতেই ব্রিটেনের এই বাগান।