মানবসভ্যতার অন্যতম কাজ প্রাণী ও উদ্ভিদের গৃহপালন। প্রায় ১০ হাজার বছর হয়ে গেল এই কাজের বয়স। গম, ধান, বার্লি, বাজরার মত শষ্যদের গৃহপালন করার কাজ দিয়ে শুরু করেছিল মানুষ। ভূতত্ববিদরা সেরকমই জানিয়েছেন। তারপর আদিম মানুষ শুরু করেছিল ফলের গৃহপালন করা। ভূতত্ববিদদের দেওয়া হিসেব অনুযায়ী সেই কাজেরও বয়স প্রায় ৫ হাজার বছর। ফল মানে সব ফল নয়। আপেল, ডালিমের মত কয়েকটা ফলের চাষ ও লালনপালনের কাজ শুরু হয়েছিল হাজার পাঁচেক বছর আগে।
এই নিয়ে আন্তর্জাতিক স্তরে গবেষণা চলছে। একটি গবেষণা জানিয়েছে তরমুজের কথা। গবেষকদের কথা অনুযায়ী যার গৃহপালন মানুষের হাতে শুরু করেছিল প্রায় ১৫ হাজার বছর আগে! প্রত্নতাত্বিক গবেষণার পর জানা গিয়েছে, বর্তমানে যে তরমুজ আমরা খাই, তার উৎসস্থল সুদান। তার প্রাচীন নাম কর্দোফান তরমুজ। জেনোমিক্স পদ্ধতিতে গবেষণা করা বিজ্ঞানীরা জেনেছেন, সাহারা মরুভূমি জুড়ে এই তরমুজের বিস্তার ছিল। তখন সাহারা মরুভূমির প্রায় অর্ধেক অংশ থাকত জলে ভরা! ঠিক কোন সময় থেকে কর্দোফান তরমুজের চাষ প্রাচীন সুদানের মানুষ শুরু করেছিল সেটা এখনও পরিষ্কার হয়নি। কিন্তু মজার কথা এখনও সুদানে বর্ষার ঠিক আগে কর্দোফান তরমুজের চাষ হয়, পাওয়া যায় বর্ষার সময়।
বর্তমানের লাল তরমুজের চাষ ঠিক কবে থেকে শুরু হয়েছিল সেটা এখনও জানা যায়নি। তবে গবেষণা একটা ব্যাপারে নিশ্চিত করেছে যে কর্দোফান তরমুজই আধুনিক লাল তরমুজের পূর্বসূরি। সেই তরমুজই বিবর্তিত হয়ে আজকের তরমুজে রূপান্তরিত হয়েছে।
বিবর্তনের অন্যতম উদাহরণ তরমুজের লাল অংশটি। কর্দোফান তরমুজে লাল অংশ নেই। বিজ্ঞানীরা বলছেন সিব জিন নামের একটি জিনের অন্তর্ভূক্তিতে লাইকোপেন নামক এক রসায়নিক পদার্থ ঢূকেছে বর্তমানের তরমুজে! তার প্রতিফলনে দেখা যায় তরমুজের লাল অংশ। একইসঙ্গে তরমুজ নিয়ে গবেষণা করা বিজ্ঞানীরা আরও এক মূল্যবান তথ্য জানিয়ে দিয়েছেন। লাল অংশটি মানুষের শরীরের পক্ষে ক্ষতিকর!