হিমালয়ের হিমবাহ গলায় সঙ্কট কতটা

হিমালয়ের হিমবাহ গলায় সঙ্কট কতটা

হিমালয়ের হিমবাহ গলছে দ্রুত হারে। গত কয়েক বছর ধরে পরিবেশবিদরা বারবার এমন দাবি করেছেন। উষ্ণায়নের ধাক্কাতেই এমনটা ঘটছে। আর তার ফলেই শুকিয়ে যাচ্ছে নদীর জল! এমনই আশঙ্কা ছড়িয়ে পড়েছে দ্রুত। কিন্তু এমন আশঙ্কাকে অমূলক বলেই জানাচ্ছে নতুন গবেষণা। এই ধরনের দাবিকে ‘অতিরঞ্জন’ বলেই জানাচ্ছেন গবেষকরা।

ক্যাটো ইনস্টিটিউটের হিমবাহ বিজ্ঞানী ভি কে রায়না এবং এই গবেষণাপত্রটির সিনিয়র এডিটর স্বামীনাথন এস আংক্লেসারিয়া আইয়ার তাঁদের গবেষণায় জানিয়েছেন, হিমবাহ গলার ফলে গঙ্গা সিন্ধু ও ব্রহ্মপুত্র শুকোতে পারে বড়জোর ১ শতাংশ। তাঁরা জানাচ্ছেন, মূলত বরফগলা জল ও বৃষ্টির জলেই ভরতি হয় নদী। যদি পৃথিবীর সমস্ত হিমবাহ নিরুদ্দেশ হয়েও যায়, তাহলেও নদীর জল শুকিয়ে যাওয়ার কোনও সম্ভাবনা নেই।
কিন্তু হিমালয়ের হিমবাহ দ্রুত গলছে, এই দাবি কতটা ঠিক? গবেষণাপত্রটিতে সেব্যাপারেও আলো ফেলা হয়েছে। জানানো হয়েছে, উপগ্রহের তোলা ছবি থেকে দেখা যাচ্ছে, হিমালয়ের অধিকাংশ হিমবাহই স্থিতিশীল। সামান্য কিছু হিমবাহকে গলতে দেখা যাচ্ছে। যেগুলির মধ্যে অল্প কিছু হিমবাহই দ্রুত গলছে মাত্র।
গবেষণাপত্রে আরও বলা হয়েছে, হিমযুগের শেষ থেকে অর্থাৎ ১১ হাজার ৭০০ বছর আগে থেকেই হিমবাহগুলির গলন শুরু হয়েছে। ইসরোর এক সাম্প্রতিক গবেষণা জানাচ্ছে, উপগ্রহের দেওয়া তথ্যানুযায়ী, ২০০১ থেকে ২০১১ সাল পর্যন্ত হিমবাহ গলার মাত্রা সেইভাবে বাড়েনি। এই সময়কালে ২০১৮টি হিমবাহের উপর নজরদারি চালিয়েছে ইসরো। দেখা গিয়েছে, সব মিলিয়ে ১ হাজার ৭৫২টি হিমবাহের কোনও সমস্যা নেই। মাত্র ২৪৮টি হিমবাহ দ্রতহারে গলছে। এর মধ্যে খারাপ অবস্থা ১৮টি হিমবাহের। দেখা যাচ্ছে, এই সব এলাকায় তুষারপাতের পরিমাণ অনেক বেশি। সেই তুলনায় হিমবাহ আচ্ছাদিত এলাকা কমই। সেই কারণে নদীর জলের পরিমাণ বাড়াতে বরফগলা জলের অবদান অনেক বেশি।